How Honey Bees Make Honey
আমরা সকলেই সাধারণ ভাবে জানি মৌমাছি বিভিন্ন ফুলের থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌচাকে জমাকরে কিন্তু আমরা ফুলের যেই মধু খাই তার স্বাদ আর মৌমাছির সংগ্রহিত মধুর স্বাদ কোন এক হয়না? আপনাদের সেটাই জানাবো।
কি করে ছোট ছোট মৌমাছি একসাথে নিরলস পরিশ্রমে মধু নামে একটি খুবই সুস্বাদু এবং মিরাকেল তরল তৈরী করে যা হাজার হাজার বছর সংরক্ষন করলেও কখনো খারাপ হয়ে যায়না।
মৌমাছিরা মধু তৈরী করে কিভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খোজা প্রথমে বিজ্ঞানীদের কাছে খুব সহজ ছিলোনা, কিন্তু কঠিন পরীক্ষা ও হাজার হাজার ঘন্টা নিরীক্ষণ এর মাধ্যমে আজকে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন মৌমাছি মধু কি করে বানায়।

How honey bees make honey
‘আপনারা জেনে অবাক হবেন মিশরের মমির মধ্যে কিছু ফোটা শুদ্ধ মধু পাওয়া গেছে যা পাঁচ হাজার বছর এর অধিক পুরানো তবে এখনে সম্পূর্ণ শুদ্ধ’
মৌমাছি একসাথে মধু তৈরি তিনটি স্তরে সম্পন্ন করে, সকল মৌচাকে তিন ধরণের মৌমাছি থাকে তার মধ্যে সংখ্যায় সর্বাধিক থাকে মধু সংগ্রাহক মৌমাছি যাদের কাজ মধু সংগ্রহ করা, শ্রমিক মৌমাছি যাদের কাজ মধু রক্ষনাবেক্ষন করা এবং রানী মৌমাছি সকল কিছুকে পর্যবেক্ষণ করা।
How Honey Bees Make Honey – মৌমাছির মধু তৈরির প্রক্রিয়া
মধু তৈরির প্রাথমিক শুরু হয় মধু সংগ্রহক মৌমাছি মাধ্যমে ফুল থেকে উপযুক্ত মধু সংগ্রহের মাধ্যমে। ফুল থেকে যে প্রাথমিক মধু মৌমাছি সংগ্রহ করে তাকে নিপটার বলাহয়। পর্যাপ্ত পরিমানে নিপটার থাকা ফুলের সন্ধানে মৌমাছি মৌচাকের পার্শবর্তী অঞ্চলে ঘুরে বেড়ায়।
যখনি কোন মৌমাছি উপযুক্ত নিপটার সহ ফুলের সন্ধান পায় মৌচাকে ফিরে গিয়ে সকল মধু সংগ্রহক মৌমাছিকে বিশেষ অঙ্গ ভঙ্গির মাধ্যমে সেখানে ডেকে আনে। আর মৌমাছিদের এই বিশেষ বৈশিষ্ট প্রথমে আবিষ্কার করেন কার্ল ভন ফ্রিসেহ (Karl Von Frisch) নামক পতঙ্গ বিজ্ঞানী।
প্রতিটি মৌমাছির শরীরে দুইটি পাকস্থলী থাকে, একটি তাদের মধু সংগ্রহের পাকস্থলী ফুলের মধু প্রথমে তাদের মধু পাকস্থলীতে গমনকরে সেখানে এনজাইমের সাথে মিশে মধু তৈরির প্রথম ধাপ সম্পন্ন করে। মৌমাছিদের মধু পাকস্থলী পূর্ণ করার জন্য প্রায় হাজার ফুলের নিপ্টারের (মধু) প্রয়োজন হয়।
আপনারা জেনে অবাক হবেন যে পাকস্থলী থেকে মৌমাছি মধু সরাসরি মৌচাকে জমাকরে না। তারা মৌচাকে থাকা অন্য মৌমাছির মুখে মধু প্রবেশ করায় প্রথমে যখন বিজ্ঞানীরা এই অস্বাভাবিক লক্ষণ আবিষ্কার করেন তারা এটার কারণ ভেবে পাচ্ছিলেন না।
পরবর্তীতে তারা আবিষ্কার করলেন মৌমাছি মধুকে অধিক শুদ্ধ এবং উন্নত করার জন্য একাধিক মৌমাছির মধু পাকস্থলীতে প্রবেশ করায় যাতে অধিক পরিমানে এনজাইম মধুতে মিশতে পারে।
এই এনজাইম মিশ্রণ পর্বের পরবর্তী মৌমাছি মধু মৌচাকে জমাকরে এবং আবার মধু আহরণে গমন করে। তখন মৌচাকের শ্রমিক মৌমাছি এই মধুকে পরিচর্যা ও মৌচাকের ভরে যাওয়া মধুর চাকের ছোট ছোট মধু ভর্তি টিউবের মুখের উপর মমের মতো আবরণ দিয়ে বন্ধ করে দেয়। যাতে জল এবং অন্য কোন ময়লা আবর্জনা না মেসে এবং তার পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকে।
মৌচাকের অন্য অংশে রানী মৌমাছি এই ছোট ছোট টিউবের মধ্যে বংশো বিস্তারের জন্য ডিম দেয়। শ্রমিক মৌমাছি সেই অংশেরও পরিচর্যায় নিয়োজিত থাকে।
আসলে মৌমাছি তাদের এই বংশধরেদের জন্যই অতি কষ্টে মধু সংগ্রহ করে রাখে যাতে তারা বড়ো হয়ে উরতে শেখা পর্যন্ত মৌচাকের মধু খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে।
Conclusion
অতি ছোট একটি প্রানী কীভাবে একটি কঠিন কাজকে দলগতে প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই মহা সুস্বাদু একটি তরল উৎপন্ন করে যা হাজার হাজার বছর কোন প্রকার ব্যাকটেরিয়া এটির কোন ক্ষতি করতে পারে না। এটি সত্যি এই মহা বিশ্বের মহা বিস্ময়।