মাদার টেরেসার জীবনী | Mother Teresa Biography in Bengali

Mother Teresa Biography in Bengali

এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে প্রতিটা জীব সাধারণত নিজের জন্যই চিন্তাকরে ও নিজের জন্য বেঁচে থাকার প্রয়াস চালিয়ে যায় এই কথাটি আমাদের মানব সমাজে জন্মনেয়া মানুষের জন্যও প্রযোজ্য।

সাধারণ ভাবে আমরা আমাদের ও পরিবারের সুখ শান্তি ও বিলাসিতার চিন্তায় কাজকরি ও নিজেদের নিয়েই সুখী থাকতে ভালোবাসি অপরের দুঃখ কষ্ট খুব কম মানুষের মনেই বেদনার জন্ম দেয়। আর তারও চাইতে কম মানুষ রয়েছেন এই পৃথিবীতে যারা নিজেদের জীবনের সময় ও উপার্জন অন্যের জন্য ব্যায় করেন।

মাদার টেরেসা ছিলেন এমনই একজন জনদরদী ও সমাজসেবী ব্যাক্তিত্ব যিনি তার মানব জীবনের সমস্তটাই দান করেছেন গরিব, দুঃখী, দুস্থ, অনাথ ও দাঙ্গা পীড়িত মানুষের কল্যানে। মানবতার সেবার তার অবদান সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল।

mother teresa biography in bengali
Mother Teresa

নাম: – মাদার টেরিজা বেজাঝিউ
জন্ম: – ২৬ আগস্ট ১৯১০ ( অটোমান সাম্রাজ্য) স্কোপিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া
মৃত্যু: – ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ইন্ডিয়া,
বয়স: – ৮৭ বছর
ধর্ম: – ক্যাথিলিক, ক্রিস্টান
পেশা: – ক্যাথিলিক সন্ন্যাসিনী, ধর্মপ্রচারক
পরিচিতি: – দা মিশনারিজ অফ চ্যারিটি
নাগরিকত্ব: – ইন্ডিয়ান (১৯৪৭ – ১৯৯৭)
পুরস্কার: – নোবেল শান্তি পুরস্কার (১৯৭৯)
ভারত রত্ন (১৯৮০),
প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম (১৯৮৫)
বালজান পুরস্কার (১৯৭৮)

Mother Teresa Early Life

মাদার টেরিজার জন্ম ২৬ অগাস্ট ১৯১০ সালে আলবেনিয়ায় হয়েছিল, তিনি আলবেনিও বংশোদ্ভূত ছিলেন। তার পিতার নাম নিকোলা বোজাঝিউ, ও মাতা দ্রোনাফাইল বোজাঝিউ। তার পিতা একজন নির্মাণ শিল্প উদ্যোগপতি ছিলেন। মাদার টেরিজার এক ভাই ও এক বোন ছিল তাদের নাম এগা বোজাঝিউ, লেজার বোজাঝিউ।

মাদার টেরিজার অল্পবয়সে তার পিতার মৃত্যু হয়ে যায় স্বাভাবিক কারণে তার পিতার ব্যাবসায়িক বন্ধুরা তার ব্যাবসায়িক শেয়ার তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেন। সেই সময় তাদের পরিবারে ভয়ানক আর্থিক সংকটের মধ্যে চলে আসে।

সেই সময় তার মা দ্রোনাফাইল বোজাঝিউ খুবই দক্ষতার সাথে সেই আর্থিক পরিস্থিকে ধীরে ধীরে উন্নতির চেষ্টা করতে থাকেন। তিনি সেইসময় সেলার বা আম্ব্রোডায়রির কাজ করতে থাকেন।

মাদার টেরিজা এমন এক পরিবারে জন্মেছিলেন যে পরিবারে ধর্মের চৰ্চা ও মানবতার উপকার করা হত, তার পিতার মৃত্যুর পরে আর্থিক সমস্যার মধ্যেও তার মা অন্যদের উপকারের সাহায্য করতেন।

বলা হয়েথাকে অল্প বয়স থেকেই মাদার টেরিজা খুব শান্ত ও কম কথা বলতেন তিনি খুব শান্তভাবে সবকিছু বিচার করতেন। ভাবা হয় তার ক্যাথিলিক সন্যাসিনী হওয়ার বিচার তার পরিবারের ধার্মিক ও উপকারী মানসিকতার জন্য এসেছিলো।

Mother Teresa Biography | মাদার টেরিজার কর্মজীবন

তবে শুরুতে তার এই সিদ্ধান্ত তার মা এবং ভাই বোনকে খুব আহত করে কারণ তার পরিবার জানতে এতে হয়তো সারাজীবনের জন্য তাদের সাথে টেরিজার দেখা হওয়ার আর সৌভাগ্য নাও হতে পারে। কারণ মানুষের সেবা ও ধর্ম প্রচারের জন্য তাকে সুদূর কোন দেশে যেতে হবে।

পুরস্কার ও সম্নাননা

মাদার টেরিজার জীবনকালে তাকে বিভিন্ন দেশের অজস্র পুরস্কারে ভূষিত করা হয় তার প্রাপ্ত পুরস্কারের সংখ্যা অগণিত ও অসংখ। তিনি ভারতীয় সর্বোচ্ছ সম্মান ভারতরত্ন পুরস্কার প্রাপ্ত হন ১৯৮০ সালে।

তাকে আমেরিকার সর্বাধিক পুরস্কার প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম (১৯৮৫) প্রদান করা হয় সেই সময় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডোনাল্ড রিগান। ডোনাল্ড রিগান ও তার সহধর্মিনীর উপস্থিতিতে মাদার টেরিজা সম্মান গ্রহণ করেন।

তিনি নোবেল বিশ্ব শান্তি পুরস্কার লাভ করেন ১৯৭৯ সালে সেই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তার দেয়া ভাষণে মুগ্ধ হয়ে যায় গোটা নোবেল পুরস্কার প্রদানে আগত বিখ্যাত অতিথিরা। সেই ভাষণের কিছু অংশ সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ইউটুবে ও রয়েছে চাইলে সবাই সেই মুগ্ধকর বক্তিতা শুনতে পারেন।

নাগরিকত্বের দিক থেকে ভারতীয় হলেও তার জন্মভূমি আলবেনিয়া, তার মাতৃভূমি দেশ থেকেও তাকে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্ছ সম্মান পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

Leave a Comment

error: Content is protected !!