Raja Ram Mohan Roy Biography Bengali
রাজা রামমোহন রায় বিখ্যাত এই বাঙালির অবদান তৎকালীন ব্রিটিশ শাসিত ভারতে সারা ভারতবর্ষে সমান ভাবে সীকৃত, সতীদাহ প্রথা বিলুপ্তি তারই পরামর্শে ও লড়াইতে হয়েছিল।
অত্যান্ত সম্ভ্রান্ত বাঙালি পরিবারে জন্ম গ্রহণকরা এই সমাজ সংস্কারের এই মহাপুরুষ তাই প্রসারিত দূর দৃষ্টির মাধ্যমে বাঙালি সমাজ ও ভারত থেকে আরও অনেক কু প্রথার বিলুপ্তি করেছেন।

রামমোহন রায় বাংলার নবজাগরণের প্রতিষ্ঠাতা ও পথ প্রদর্শক তার এই প্রয়াসে পরবর্তীতে আরও বিভিন্ন মহান ব্যাক্তি এই আন্দোলনে নিজেকে সামিল করেন।
মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর রামমোহনকে রাজা উপাধি প্রদান করেছিলেন, ভারতের সামাজিক ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন ও ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।
রাজনীতি, জনপ্রশাসন, শিক্ষা ও ধর্মের ক্ষেত্রে তাঁর প্রভাব স্পষ্টতই ছিল, রাম মোহন রায়কে “আধুনিক ভারতের জনক” এবং “ভারতীয় নবজাগরণের জনক” বলা হয়।
Raja Ram Mohan Roy History
২২ মে ১৭৭২ সালে তিনি ব্রিটিশ ভারতের রাধানগর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন স্থানটি হুগলী জেলার শ্রীরামপুরে অবস্থিতি, রাধানগর রামমোহন রায়ের মামার বাড়ি।
রামমোহন রায়ের পিতার নাম রামকান্ত রায় এবং তার মায়ের নাম ছিল তারিণী দেবী, খুব কম বয়সে তিনি ঘোরছেড়ে বেরিয়ে পড়েন ও নানান স্থানে ঘুরতে থাকেন এবং জীবনকে উপলব্ধি করেন।
সতীদাহ প্রথা কি?
তৎকালীন ভারতে হিন্দু ধর্মীয় বিভিন্ন প্রথার মধ্যে প্রধান এবং ভয়ংকর একটি প্রথা ছিল সতীদাহ প্রথা, এই প্রথাটি খুবই অমানবিক এবং নির্মম একটি রীতি।
এই প্রথা কিংবা রীতির বৈশিষ্ট ছিল কোন ব্যাক্তি যদি তার অর্ধাঙ্গিনী স্ত্রীরির পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন তবে তার পত্নীকে ও সেই মৃত ব্যাক্তির জলন্ত চিতায় স্বেচ্ছায় মিত্তু দেয়া যেত।
স্বামীর মৃত্যুর সময় আবেগপ্রবণ হয়ে অনেকে এই ভাবে মিত্তু মেনে নিতেন, আবার অনেক পত্নী এই ভাবে তার মিত্তু মানতে চাইতেননা তাদেরকে বেঁধে জোরপূর্বক চিতায় নিক্ষেপ করা হত।
Ram Mohan – রামমোহন রায়ের অবদান
রাজা রামমোহন রায় এই জঘন্য প্রথার বিরুদ্ধে সঙ্গবদ্ধ ঐক্য গড়ে তোলেন এবং তৎকালীন ব্রিটিশ শাসকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তার প্রাচ্যের ফলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আইন পাস্ করে।
রামমোহন রায়ের সৌজন্যে লক্ষ লক্ষ নারীর জীবন বেঁচে যায়, পরবর্তীতে গোড়া ব্রাহ্মণদের চাপে এই আইনটি পরিবর্তনের চেষ্টা করা হলেও রামমোহনের ব্রিটিশ জনপ্রিয়তায় সেটি সম্ভব হয়নি।
রাম মোহন রায়ের মৃত্যু
রাম মোহন রায়ের মৃত্যু হয় ১৮৩৩ খিষ্ট্রাব্দে, ইউরোপের কিছু দেশ ঘুরে রাজা রাম মোহন রায় যখন ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে কিছুদিন থাকা কালীন তিনি মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রায় ৮ দিন জ্বরে ভুগে তার মৃত্যু হয় ২৭ সেপ্টেম্বর ১৮৩৩ খিষ্ট্রাব্দে।

সমাধি । Tomb of Raja Ram Mohan Roy
রাম মোহন রায়কে মূলত 18 অক্টোবর 1833 সালে স্ট্যাপলটন গ্রোভের মাটিতে দাফন করা হয়েছিল, যেখানে তিনি 27 সেপ্টেম্বর 1833 সালে মেনিনজাইটিসে মারা গিয়েছিলেন। সাড়ে নয় বছর পর 29 মে 1843 তারিখে নতুন আর্নোস ভ্যালির একটি কবরে তাকে পুনরুত্থিত করা হয়েছিল। এই কবরস্থান টি , পূর্ব ব্রিস্টলের ব্রিসলিংটনে। এর দুই বছর পর, দ্বারকানাথ ঠাকুর এই সমাধির উপরে মন্দির তৈরির জন্য অর্থ প্রদান করতে সাহায্য করেছিলেন। ছোট আকারের এই সমাধি মন্দিরের নকশা করেছিলেন শিল্পী উইলিয়াম প্রিনসেপ, যিনি কলকাতায় রাজা রাম মোহনকে চিনতেন।
ব্রিস্টল আর্নোস ভ্যালি কবরস্থানে প্রতিবছর রাজা রাম মোহন রায়ের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুবার্ষিকীর তারিখের কাছাকাছি রবিবার স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশন প্রায়ই রাজার বার্ষিক স্মরণে আসে। ব্রিস্টলের লর্ড মেয়রও উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। স্মরণ অনুষ্ঠান যেখানে তার উদ্দেশে প্রার্থনা ও স্তোত্র গাওয়া হয়, সমাধিতে ফুল দেওয়া হয় এবং রাজা রাম মোহন রায়ের জীবন আলোচনা এবং নাট্য উপস্থাপনার মাধ্যমে খুব উৎসাহের সাথে উদযাপিত হয়।
আরও পড়ুন:
This is great
Raja Rammohan Roy was one of the pioneers in abolishing Sati …He is my all time hero